লাইফস্টাইল ডেস্ক: শীতের হাওয়া, প্রকৃতির রুক্ষতা ও শুষ্কতা ছাপ ফেলে শরীরেও। এ সময়ে স্বাস্থ্য, ত্বক সব কিছুরই প্রয়োজন বাড়তি যত্নের।
শীতে শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশ খানিকটা কমে যায়। ঠাণ্ডা আবহাওয়ার কারণে সর্দি, কাশি, পেটে সমস্যা, জ্বর, ঠাণ্ডাজনিত গলাব্যথা এ ধরনের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
আসুন জেনে নিই শীতে যা খেলে শরীর ভালো থাকবে-
১. ভিটামিন সি-যুক্ত খাবার যেমন লেবু, কমলালেবু, পেয়ারা, মালটা প্রতিদিন খাবারের তালিকায় রাখার চেষ্টা করুন। এসব ফল ভালো কলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়াতে এবং খারাপ কলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া ফল শীতে দেহের উষ্ণতা বাড়াতেও সাহায্য করে এবং ত্বক রাখে সুরক্ষিত।
২. বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় শীতকালে তুলনামূলক কম পরিমাণ পানি খাওয়া হয়। তাই শীতের শুরু ও শেষের সময়ে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা বেশি দেখা দেয়। কারণ ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় পানি পানের প্রবণতা কমে যায়। তাই এ সময় বেশি করে পানি পান প্রয়োজন।
৩. শীতের সময়টায় বিভিন্ন ধরনের শাক পাওয়া যায়। বেছে নিতে পারেন বুটের শাক, ছোলার শাক, মোটর শাক, খেসারি শাক, পালং শাক, কলাইয়ের শাক, বতুয়া শাক, যা ভিটামিন, মিনারেলস আর আঁশ সমৃদ্ধ।
৪. শীতে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ে। সবজিতে থাকে আঁশ ও প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান। তাই মৌসুমি সবজি যেমন ফুলকপি, মটরশুঁটি, শিম, মুলা, শালগম, চালকুমড়া, মিষ্টিকুমড়া, পেঁপে, মরিচ, নানা ধরনের বীজ, বাঁধাকপি, ব্রকলি, লাউ, গাজর আর ফলের মধ্যে আপেল, আঙুর, ডালিম, নাশপাতি, কমলা, আমড়া, বরই ইত্যাদি রাখুন রোজকার খাবারের তালিকায়। টাটকা ফল ও সবজিতে আছে বায়োটিন, যা ত্বক ও চুল ভালো রাখে।
৫. দুধ ছাড়া তিন-চার ফোঁটা লেবুর রস দিয়ে চা খেতে পারেন। এটি আপনার শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কাজ করবে।
৬. শীতে ত্বক হয়ে পড়ে রুক্ষ। কাঠবাদামকে সাধারণত শুকনো ফলের রাজা বলা হয়ে থাকে, যা ফ্যাটি অ্যাসিড, প্রোটিন এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ। শীতকালের খাবার তালিকায় এ খাবারটি থাকলে তা স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অত্যন্ত ভালো কাজ করে। বাদাম ও সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাটি অ্যাসিড আছে। তাই এগুলো খান বেশি করে।
৭. এ সময় কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার কম খান। ভাতের পরিমাণ কম রেখে লাল আটার রুটি, চিড়া, মুড়ি, কর্নফ্লেক্স ইত্যাদি খেতে পারেন। পাশাপাশি ফল, শাক ও ডাল বেশি খান।
৮. অতিরিক্ত ভাজা খাবার এড়িয়ে চলুন। অলিভ অয়েল ব্যবহার করুন। এতে হার্ট ভালো থাকবে।
৯. শীতকালে খুব একটা ব্যায়াম করা হয় না। তার জন্যও অনেক সময় ওজন বেড়ে যায়। স্বাভাবিক নিয়ম অনুসারে খাওয়া-দাওয়া করাটাই ভালো।
লেখক : পুষ্টিবিদ, নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ ডায়েটেটিক্সস অ্যান্ড নিউট্রিশন ট্রাস্ট